কত দাম এস-৪০০-এর? কত ক্ষতি হলো ভারতের?

রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ (S-400 Triumf) বিশ্বে অন্যতম উন্নত ও শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে বিবেচিত। আলমাজ-আন্তেই (Almaz-Antey) কর্তৃক ডিজাইনকৃত এই সিস্টেম বিমান, ড্রোন, ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ মিসাইল শনাক্ত এবং ধ্বংস করতে সক্ষম। আধুনিক যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পাল্টা আক্রমণ ব্যবস্থা, যার ফলে অনেক দেশ এই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করছে, যার মধ্যে ভারত অন্যতম।এস-৪০০-এর দামএস-৪০০ সিস্টেমের দাম নির্ভর করে বিভিন্ন বিষয়ের উপর—যেমন কতগুলো ব্যাটারি অর্ডার করা হয়েছে, কোন ধরনের রাডার ও ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত আছে, প্রযুক্তি হস্তান্তর আছে কিনা এবং রাশিয়ার সাথে সেই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কেমন।সাধারণভাবে একটি পূর্ণ এস-৪০০ ব্যাটারির দাম প্রায় ৫০ কোটি থেকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। ভারত ২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রায় ৫.৪৩ বিলিয়ন ডলারে ৫টি এস-৪০০ ইউনিট কেনার চুক্তি করে, অর্থাৎ প্রতি ইউনিটে খরচ পড়ে প্রায় ১.০৮ বিলিয়ন ডলার—এটি ভারতের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ প্রতিরক্ষা চুক্তি।এস-৪০০-এর ক্ষমতাএই আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা সিস্টেমটির ক্ষমতা সত্যিই বিস্ময়কর:সর্বোচ্চ আক্রমণ দূরত্ব: ৪০০ কিমি পর্যন্ত।লক্ষ্য শনাক্তকরণ ক্ষমতা: ৬০০ কিমি পর্যন্ত।বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের সুবিধা: ৪০ কিমি, ১২০ কিমি, ২৫০ কিমি এবং ৪০০ কিমি পর্যন্ত দূরত্বের মিসাইল নিক্ষেপে সক্ষম।লক্ষ্যবস্তুর সংখ্যা: একসাথে ৩০০টির বেশি লক্ষ্য শনাক্ত করতে এবং ৩৬টি লক্ষ্যবস্তুকে একযোগে আক্রমণ করতে পারে।এই বৈশিষ্ট্যগুলো এস-৪০০-কে বিশ্বের অন্যতম কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।ভারতের ক্ষতি ও বিলম্বচুক্তি স্বাক্ষরের পর ভারত এখন পর্যন্ত পাঁচটির মধ্যে মাত্র তিনটি ইউনিট পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের CAATSA আইন এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ডেলিভারিতে বড় ধরনের বিলম্ব হয়েছে। যদিও আর্থিকভাবে কোনো সরাসরি ক্ষতি হয়নি (কারণ অর্থ পর্যায়ক্রমে প্রদান করা হচ্ছে), তবে কৌশলগতভাবে ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় এটি একটি বড় ধাক্কা।বিলম্বের ফলে সীমান্তে উত্তেজনা চলাকালীন ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা অনেকাংশে দুর্বল থেকে যাচ্ছে—যা ভারতের নিরাপত্তা পরিকল্পনার জন্য উদ্বেগের কারণ।

এস-৪০০ শুধু একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নয়, এটি একটি দেশের সামরিক সক্ষমতার প্রতীক। ভারতের বিনিয়োগ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে বৈশ্বিক রাজনৈতিক বাস্তবতা এর বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

Leave a Reply