
পুকুর পাড়ে হিজল ফুলের গাছ 🌸♥
নার্গিস কেয়া, ঢাকা
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, বিকেল ৫ টা
বেণিতে গাঁথা মালার মতো দুলছে হিজল ফুলের নরম ঝুমকা। মৌলভীবাজারের রাজনগরের কাউয়াদীঘি হাওরের অন্তেহরি গ্রামে গেল শুক্রবার এমনই এক নীরব অথচ মুগ্ধকর সৌন্দর্যের মুখোমুখি হতে হলো।গ্রামটি যেন ঘুমভাঙা এক নরম সকাল। এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ছায়াঘেরা নিস্তব্ধতা। জীবনানন্দ দাশের কবিতার সেই বিখ্যাত লাইন—‘পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে’—এখানে এসে যেন হঠাৎ সত্যি হয়ে ওঠে। যদিও পৃথিবীর সব ঘুঘু নয়, তবু দু-একটি ঘুঘুর ডাক, আর অন্য পাখির সুরেলা শব্দে গাঁথা সেই নির্জনতায় প্রকৃতি নিজেই হয়ে উঠেছে কবিতা।পথের ধারে, খালের পাড়ে, বাড়ির সীমানা ঘেঁষে হিজল গাছ দাঁড়িয়ে আছে ফুল-কুমারীর মতো, যেন গ্রীষ্মের রাণীর একান্ত সাজ। সংখ্যা খুব বেশি নয়, তবুও অন্য গাছেদের ভিড়ে হিজল গাছগুলো নিজের স্বকীয়তা নিয়ে চোখে পড়ে, মন কাড়ে। প্রতিটি গাছ যেন একেকটি শিল্পকর্ম—তাদের ডালে ডালে ঝুলছে মালার মতো হিজল ফুল, হাওয়ায় দুলছে নিঃশব্দ সুরের মতো।ফুলগুলো মাঝে মাঝে গাছ থেকে নিঃশব্দে ঝরে পড়ে। নরম পাপড়ির সেই ছিটেফোটা সৌন্দর্যে গাছতলায় তৈরি হয় লালচে-গোলাপি এক নিসর্গচাদর। হাওরপারের হালকা বাতাসে ফুলের মৃদু ঘ্রাণ যেন প্রকৃতির একান্ত ভালোবাসার বার্তা হয়ে ভেসে বেড়ায়।হিজল গাছ শুধু ফুল নয়, বহন করে গ্রীষ্মের হাওর অঞ্চলের আবেগ, ইতিহাস আর নিঃসঙ্গ রূপের চিহ্ন। অন্তেহরি গ্রামের এই হিজলবিথী যেন বলে যায়, প্রকৃতির ভাষা কখনো জোরালো নয়—তা হয় নিঃশব্দ, কোমল, আর গভীর।